"তারেক রহমানের তো পাসপোর্ট নাই দেশে আসবে কিভাবে - সারজিস আলম"। এই একটি মন্তব্যেই রাজনীতির মাঠ যেন হঠাৎ গরম হয়ে উঠেছে।
জনাব সারজিস আলমের পরিচয় এবং এই মন্তব্যের মূল প্রেক্ষাপট নিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান চালিয়েছে 'বালেরখবর.কম' ।
মন্তব্য এবং বিতর্কের সূত্রপাত:
জনাব সারজিস আলম কে? এই প্রশ্ন প্রথমে উঠলেও, তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে তাঁর মন্তব্যটিই এখন আলোচনার কেন্দ্রে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, সবার মনে একটাই প্রশ্ন— সত্যিই কি তারেক রহমানের বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই? আর পাসপোর্ট না থাকলে তিনি দেশে ফিরবেন কিভাবে?
তথ্যানুসন্ধানে যা জানা যায়:
জনাব সারজিস আলমের মন্তব্যের ভিত্তিতে 'বালেরখবর.কম' বিভিন্ন পুরোনো ও সাম্প্রতিক সংবাদমাধ্যম তথ্য ঘেঁটে দেখছে যে, তারেক রহমানের পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিষয়টি বহু বছর ধরেই রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু।
১. পাসপোর্ট সমর্পণ: বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের পুরোনো খবর অনুযায়ী, ২০১৮ সালের দিকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এক বিবৃতিতে বলেছিলেন যে তারেক রহমান, তাঁর স্ত্রী ও কন্যা তাঁদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমর্পণ করেছেন। পরে সেই পাসপোর্টগুলো বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে রক্ষিত আছে। অর্থাৎ, তারেক রহমানের কাছে বর্তমানে কার্যকর বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই।
২. পাসপোর্টবিহীন নাগরিকত্ব: পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা তখন জানিয়েছিলেন, পাসপোর্ট সমর্পণ করার সঙ্গে নাগরিকত্বের কোনো সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ, পাসপোর্ট না থাকলেও তিনি বাংলাদেশের নাগরিক।
৩. পাসপোর্ট পাওয়ার সুযোগ: সাজাপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) না থাকার কারণে তারেক রহমানের নতুন করে পাসপোর্ট পাওয়ার সুযোগ নেই বলে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।
৪. দেশে ফেরার পথ: আইন বিশেষজ্ঞরা এবং সংশ্লিষ্ট সরকারী মহল বিভিন্ন সময়ে বলেছেন যে, পাসপোর্ট না থাকলেও তারেক রহমান দেশে ফিরতে চাইলে সরকার ট্রাভেল ডকুমেন্ট (ভ্রমণ সংক্রান্ত কাগজপত্র) বা 'Emergency Travel Document' (জরুরী ভ্রমণ নথি) দিতে পারে। তবে এর জন্য তাকে আবেদন করতে হবে এবং দেশে ফেরার বিষয়টি তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।
৫. বিএনপি'র বক্তব্য: বিএনপি নেতারা বারবার বলছেন, সরকার তাকে পাসপোর্ট নবায়নে সহযোগিতা করছে না এবং দেশে ফিরতে হলে তাঁর জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তারা মনে করেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশে পাসপোর্ট সংক্রান্ত জটিলতা সৃষ্টি করেছে।
সারজিস আলমের এই মন্তব্য সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন নয়। তারেক রহমানের কাছে সত্যিই বর্তমানে কোনো কার্যকর বাংলাদেশি পাসপোর্ট নেই। তিনি একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। তার দেশে ফেরা আইনি ও রাজনৈতিক উভয় দিক থেকেই জটিল।
জনাব সারজিস আলমের মন্তব্যটি তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে বিদ্যমান বাস্তবতাকে আরও একবার সামনে এনেছে এবং রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। এই মন্তব্য পাঠকের মনোরঞ্জনের জন্য যথেষ্ট উপাদান সরবরাহ করেছে, কারণ তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে জনগণের আগ্রহ সব সময়ই তুঙ্গে থাকে।
প্রশ্ন থেকেই যায়: তারেক রহমান কি সত্যিই পাসপোর্ট ছাড়াই দেশে ফিরবেন? নাকি এই রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলতেই থাকবে?
বালেরখবর.কম ভবিষ্যতে আরও আপডেটের জন্য চোখ রাখবে।
0 coment rios:
আপনার মতামত দিন